শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

আজহারের রায় যে কোন দিন

42108_b4

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাত্তরে
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে যে কোন দিন। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গতকাল আজহারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি খণ্ডন শেষে রায় যে কোন দিন ঘোষণা করা হবে মর্মে তা অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক। এনিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পর পর ৬টি মামলার রায় অপেক্ষমাণ রাখা হলো। এর আগে চলতি বছরের ১৭ই এপ্রিল ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা পলাতক জাহিদ হোসেন, ৪ঠা মে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী, ২রা জুন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোগড়া ইউনিয়নের বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা মোবারক হোসেন, ২৪শে জুন জামায়াতের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও ২০শে আগস্ট জাতীয় পার্টি নেতা ও সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মামলার রায় অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছিল। গত ২৭শে আগস্ট থেকে ১৪ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ কার্যদিবসে আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন আজহারের আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার ও শিশির মোহাম্মদ মুনির। অন্যদিকে গত ১৮ই আগস্ট থেকে ২৬শে আগস্ট পর্যন্ত আজহারের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ও তাপস কান্তি বল। গতকাল আজহারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক খণ্ডন (রিভাইটাল) করেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম। এরপরই তা নিয়মানুযায়ী রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ আজহারের বিরুদ্ধে রায়ে সর্বোচ্চ সাজা (মৃত্যুদণ্ড) আশা করছেন। পক্ষান্তরে আসামির আইনজীবীরা তাকে নির্দোষ দাবি করে তার কোন সাজা হবে না মর্মে বলেছেন এটিএম আজহার মুক্তিযুদ্ধকালে কোন প্রকার মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন না। তাই তিনি এই মামলার রায়ে খালাস পাবেন।
গত বছরের ২৯শে আগস্ট ও ৩রা সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর একেএম সাইফুল ইসলাম। অন্যদিকে ২৪শে সেপ্টেম্বর ও ১০ই অক্টোবর অভিযোগ গঠনের বিপক্ষে শুনানি করেন আজহারের প্রধান আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক, শিশির মোহাম্মদ মুনির ও ইমরান এ সিদ্দিকী। ২৫শে জুলাই এটিএম আজহারুলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। ১৮ই জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগটি দাখিল করেন প্রসিকিউটর একেএম সাইফুল ইসলাম ও নুরজাহান বেগম মুক্তা। ৪টি ভলিউমে ৩শ’ পৃষ্ঠায় দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগে আজহারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে ৯ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়। এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তদন্ত কর্মকর্তা এস এম ইদ্রিস আলী ২০১২ সালের ১৫ই এপ্রিল থেকে শুরু করে গত বছরের ৪ঠা জুলাই পর্যন্ত মোট ১ বছর ৩ মাস ১১ দিনে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। এরপর ৯ই জুলাই প্রসিকিউশনের কাছে তদন্ত রিপোর্টটি দাখিল করে তদন্ত সংস্থা। এর ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। গত বছরের ২৬শে ডিসেম্বর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে চলতি বছরের ৬ই জুলাই পর্যন্ত আজহারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এম ইদ্রিস আলীসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১৯ জন সাক্ষী। তাদের মধ্যে সপ্তম সাক্ষী আমিনুল ইসলামকে বৈরি ঘোষণা করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে গত ৩রা ও ৪ঠা আগস্ট আজহারের পক্ষে একমাত্র সাফাই সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন আনোয়ারুল হক। গত বছরের ৫ই ডিসেম্বর আজহারের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য (ওপেনিং স্টেটমেন্ট) উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর একেএম সাইফুল ইসলাম। এর আগে ১২ই নভেম্বর এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদেশে ২০১২ সালের ২২শে আগস্ট ঢাকার মগবাজারের বাসা থেকে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।