শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

আজমলের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে লুকোচুরি খেলেছে পিসিবি

imagesyut

নিষিদ্ধ ঘোষিত পাকিস্তানি স্পিনার সাঈদ আজমলের সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশন নিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ২০০৬ সালেই রিপোর্ট করা হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ তখন চোখ বুজে ছিল। সেই থেকে আট বছর এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছয় বছর খেলার পর আজমল নিষিদ্ধ হওয়ার পর এখন নড়ে চড়ে বসেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে করা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারার পর ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) কর্তৃক নিষিদ্ধ হওয়ার পর পাকিস্তানের হয়ে ৩৬ বছর বয়সী আজমলের ক্যারিয়ারই এখন ঝুঁকির মুখে।
পাকিস্তানের জিও সুপার টেলিভিশনকে টেস্ট আম্পায়ার রিয়াজউদ্দিন বলেন, ‘তার কিছু ডেলিভারিতে সমস্যা থাকায় প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে কেআরএল এবং হাবিব ব্যাংকের মধ্যকার একটি ম্যাচের পরই আমি বোলিং অ্যাকশন নিয়ে রিপোর্ট করেছিলাম।
‘সে রিপোর্টের ভাগ্যে কি ঘটেছিল দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি তা জানতে পারিনি। তবে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এবং সে ঘরোয়া ক্রিকেট চালিয়ে যাচ্ছিল।’পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে কেবলমাত্র আজমলের একটি ঘটনাই নয়। সেখানে ম্যাচ কর্মকর্তাদের আপত্তি সত্ত্বেও সন্দেহজনক বোলারদের খেলতে দেয়া হয়েছে।পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফ একটি বার্তা সংস্থাকে বলেন, ‘এ সমস্যাটিকে পিসিবির কোনো কর্মকর্তাই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেননি।’‘এখানে বোলারদের অনেক ঘটনাই আছে যারা তাদের বাহু ১৫ ডিগ্রির বেশি বাকিয়ে থাকে, তাদেরকে খেলা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়ে থাকে।‘কিন্তু এখন আইসিসি তাদের নতুন নিয়ম অনুযায়ি সন্দেহজনক বোলারদের পরীক্ষা করার পর পিসিবি বিষয়টি অনুধাবন করতে পারছে এবং নড়েচড়ে বসা শুরু করেছে। যে কারণে তারা অবৈধ বোলিং অ্যাকশন চিহ্নিত করে তা শোধরানোর জন্য কমিটি করেছে।’লতিফ আরো বলেন আইসিসির হাই প্রোফাইল ক্রিকেটারদের থেকেই এ পরিবর্তন শুরু হয়েছে।তিনি আরো বলেন, ‘আমি যতদূর জানি ক্রিকেট কমিটির প্রধান হিসেবে অনিল কুম্বলে (সাবেক ভারতীয় স্পিনার) এই পরিবর্তনের কলকাঠি নেড়েছেন।’লাহোরে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে (এনসিএ) ২০০৯ সাল থেকে একটি বায়োকেমিক ল্যাব প্রতিষ্ঠা করার কারনেই সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের বিপক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি সম্ভবত ইতিবাচকভাবে নিয়েছে পাকিস্তান।ল্যাব প্রতিষ্ঠায় পিসিবি চার লাখ ৫০ হাজার ডলার ব্যয়ে ২০০৯ সালে যন্ত্রপাতি এনেছে। কিন্তু এখনো তা ব্যবহার করা হয়নি।দেশটির সাবেক অধিনায়ক এবং এনসিএ প্রধান আমির সোহেল বলেন, সমস্যা থাকা বোলারদের নিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটেই কাজ করার লক্ষ্যে একটি বায়োকেমিক ল্যাব প্রতিষ্ঠার জন্য বলেছেন তিনি।তিনি বলেন, ‘যেকোনো কারণেই হোক সেটা হয়নি। একই কারণে আমরা এখন সমস্যা মোকাবেলা করছি। পিসিবি এখন বুঝতে পারছে যে এটা তাদের বড় একটা সমস্যা।গত তিন বছর যাবত পাকিস্তানের সেরা বোলার আজমল নিষিদ্ধ হওয়ার পর এখন দলটির সামনে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- তার বিকল্প কে।ঘরোয়া ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি অফ স্পিনার আতিফ মকবুল এবং করাচির মিসবাহ খান। তবে তাদের অ্যাকশনের কারণে নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে আজমলের বিকল্প হিসেবে তাদেরকে বিবেচনা করা যাবে না।ঘরোয়া ক্রিকেটে সন্দেহজনক বোলিংয়ের জন্য গত বছর মিসবাহর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করা হয়েছে।পিসিবি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান বলেন, ‘এটা পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য একটা সমস্যা এবং অবৈধ বোলিং অ্যাকশন কমিটি প্রায় ২৫ জন বোলারকে চিহ্নিত করেছেন যাদের নিয়ে কাজ করতে হবে।’২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে একটি ওয়ানডে এবং দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলার পর থেকে দলের বাইরে থাকা সত্ত্বেও আজমলের সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে ২৮ বছর বয়সী ইয়াসির শাহর কথা বিবেচনা করছে পাকিস্তান।শাহরিয়ার খান বলেন, ‘আমাদের বিকল্প কাউকে খুঁজে বের করতে হবে। আমরা খুব বেশি অপেক্ষা করতে পারছি না । কারণ আমাদের সামনে গুরুত্বপূর্ণ দুটি সিরিজ আছে, এবং বিশ্বকাপও।’ইতোপুর্বে সাব্বির আহমেদ, শোয়েব আখতার, শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ হাফিজ, রিয়াজ আফ্রিদি এবং শহিদ আফ্রিদির বোলিং অ্যাকশন নিয়েও পাকিস্তানকে সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়েছে। সূত্র: ওয়েবসাইট