বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

অনুমোদন পাচ্ছে আরও ছয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

আরও ছয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হবে। শিক্ষা উদ্যোক্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্থান পরিদর্শন করে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পরে আবেদন যাচাই-বাছাই করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি তালিকা তৈরি করেছে। এ তালিকায় ১০৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রয়েছে। এ তালিকা থেকে একটি শর্ট লিস্ট তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সে তালিকা থেকেই দেওয়া হবে অনুমোদন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ধাপে আরও ছয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ইতিমধ্যে শিক্ষা উদ্যোক্তারা নানা জায়গায় তদবিরে নেমেছেন। তাদের মধ্যে বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ শাখা ক্যাম্পাস পরিচালনাকারী কয়েকজন পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

আবেদনের তালিকা থেকে জানা গেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন পাওয়ার জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, এনজিও কর্মী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক রয়েছেন। আবেদনের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সংসদ সদস্যের সুপারিশও সংযুক্ত রয়েছে। তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পেতে ইতিমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে উচ্চশিক্ষার প্রসারে জেলা শহরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়ার। রাজধানীতে আর কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হবে না। আর যারা অবৈধ আউটার ক্যাম্পাস এখনো বন্ধ করেনি তাদের ক্যাম্পাস ঈদুল ফিতরের পর সিলগালা করে দেওয়া হবে।আবেদন করেছেন যারা : বিতর্কিত দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ আউটার ক্যাম্পাসকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে ‘খাজা মঈনুদ্দিন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’ নামে আবেদন করেছেন উত্তরার ড. আবুল হোসেন। তিনি প্রাইম ইউনিভার্সিটির আউটার ক্যাম্পাস পরিচালনা করেন। আর এ বিশ্ববিদ্যালয় পেতে সুপারিশ করেছেন মহাজোট সরকার আমলের বাণিজ্যমন্ত্রী, তথ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী, পাবনা ৩ ও ৪ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ আসনের এমপিরা। রংপুরে ‘আরডিআরএস বিশ্ববিদ্যালয়’ চেয়ে আবেদন করেছেন আরডিআরএস (এনজিও)-এর নির্বাহী পরিচালক কামাল উদ্দিন আকবর। এ আবেদনে সুপারিশ করেছেন মহাজোট সরকারের খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী, বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। কুমিল্লায় স্থাপনের জন্য ‘কুমিল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ পেতে আবেদন করেছেন অধ্যাপক ড. আবদুল মতিন পাটোয়ারী। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সুপারিশ করেছেন সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্থাপনের জন্য ‘ওয়েস্টার্ন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র জন্য আবেদন করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, আড়াইহাজারের বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু। ঢাকার বাইরে প্রতিষ্ঠার জন্য ‘আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’ পেতে আবেদন করেছেন আ ন ম শামশুল ইসলাম এমপি, খুলনায় স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার জন্য ‘খুলনা ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’ পেতে আবেদন করেছেন এম এ কাইয়ুম। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সুপারিশ করেছেন মহাজোট সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী। কুষ্টিয়ায় ‘মেরিট ইউনিভার্সিটি’র জন্য আবেদন করেছেন ব্যবসায়ী ইমদাদুল হক। ঢাকার বাইরে প্রতিষ্ঠার জন্য ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ চেয়ে আবেদন করেছেন জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর ডা. এম আর খান। নর্দার্ন ইউনিভার্সিটির খুলনায় অবস্থিত অবৈধ আউটার ক্যাম্পাসকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে ‘খানজাহান আলী বিশ্ববিদ্যালয়’ নাম দিয়ে আবেদন করেছে মো. বোরহান উদ্দিন। ‘গাজীপুর ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’ চেয়ে আবেদন করেছেন বর্তমান সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। ঢাকায় প্রতিষ্ঠার লক্ষে ‘ঢাকা কমিউনিটি বিশ্ববিদ্যালয়’ চেয়ে আবেদন করেছেন অধ্যাপক কাজী কামরুজ্জামান। ঢাকায় প্রতিষ্ঠার জন্য আরেক ব্যবসায়ী আবদুল হাই ‘গ্রিনল্যান্ড ইউনিভার্সিটি’র জন্য আবেদন করেছেন। কিশোরগঞ্জে ‘ওরিয়েন্টাল ইউনিভার্সিটি’র জন্য আবেদন করেছেন প্রকৌশলী এ কে এম আবু রায়হান। চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠার জন্য ‘কসমোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়’ চেয়ে আবেদন করেছেন মোহাম্মদ ওসমান গনি। সিলেটে ‘কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয়’ চেয়ে আবেদন করেছেন আবিদুর রহমান সিমু। ঢাকার মিরপুরে প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে ‘ইউসেফ বিশ্ববিদ্যালয়’-এর জন্য আবেদন করেছেন ইউসেফ বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) সালাহউদ্দিন আকবর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের ভিত্তিতে একটি তালিকা মন্ত্রণালয় তৈরি করেছে। এখান থেকে আরও নাম বাদ যাবে। মন্ত্রণালয়ের ঊধর্্বতনদের সমন্বয়ে একটি চূড়ান্ত তালিকা হবে।