বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

রাজন হত্যায় কামরুলসহ চার জনের ফাঁসির রায়

সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যায় মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামসহ চার জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
রোববার সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা এই রায় দেন।
রায়ে মামলার ১৩ আসামির মধ্যে খালাস পেয়েছেন তিন জন। কামরুলের তিন ভাইয়ের হয়েছে সাত বছর করে কারাদণ্ড। বাকিদের মধ্যে এক জনের যাবজ্জীবন এবং দুই জনের এক বছর কারাদণ্ড হয়েছে।
রায়ে এক বছর করে কারাদণ্ড হওয়া দুইজনকে এক হাজার টাকা করে এবং দণ্ডপ্রাপ্ত অন্যদের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদয়ে তাদেরকে আরও ২ মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
গত ৮ জুলাইয়ের ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরুর পর মাত্র ১৭ কার্যদিবসে ঘোষিত হলো দেশজুড়ে আলোচিত এই হত্যা মামলার রায়। গত ২২ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছিল মামলার বিচার।
গত ২৭ অক্টোবর মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে একই বিচারক রায়ের দিন ঠিক করে দেন।
রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- ময়না চৌকিদার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও জাকির হোসেন পাভেল আহমদ।
রায়ে খালাস পেয়েছেন- ফিরোজ মিয়া, আজমত উল্লাহ ও রুহুল আমিন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে নুর মিয়ার। সাত বছর করে কারাদণ্ড হয়েছে- কামরুলের তিন ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহমদের। এক বছর করে দণ্ড হয়েছে দুলাল আহমদ ও আয়াজ আলীর।
কামরুলের আরেক ভাই শামীম আহমেদ ও জাকির হোসেন পাভেল আহমেদ পলাতক রয়েছেন।
গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে ১৩ বছরের শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এরপর মাস না ঘুরতেই ৩ অগাস্ট খুনলার টুটুপাড়া কবরখানা মোড়ের মোটরসাইকেলে হাওয়া দেওয়া কমপ্রেসার মেশিনের মাধ্যমে মলদ্বারে হাওয়া ঢুকিয়ে হত্যা করা হয় ১২ বছরের শিশু রাকিব হাওলাদারকে। আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডের রায়ও আজ হয়েছে। এতে দুই জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে এবং আরেক জন খালাস পেয়েছেন।
সিলেটে রাজন হত্যার দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে ১৬ অগাস্ট ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুরঞ্জিত তালুকদার।
আসামিরা হলেন- সদর উপজেলার শেখপাড়ার বাসিন্দা কামরুল ইসলাম, তার ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহমদ, পাভেল আহমদ, ময়না চৌকিদার, রুহুল আমিন, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল, দুলাল আহমদ, নুর মিয়া, ফিরোজ মিয়া, আজমত উল্লাহ ও আয়াজ আলী।
রাজন হত্যার পর ১০ জুলাই সৌদি আরব পালিয়ে যান মূল অভিযুক্ত কামরুল। গত ১৫ অক্টোবর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
কামরুলকে নিয়ে এই মামলার আসামিদের মধ্যে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পলাতক রয়েছেন কামরুলের আরেক ভাইসহ দুজন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়েছে।
গত ১ অক্টোবর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৬ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে।
তবে মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামের আইনজীবীর আবেদনে ১১ সাক্ষীর পুনরায় জবানবন্দি শোনে আদালত। ২১ অক্টোবর শেষ হয় পুনঃসাক্ষ্যগ্রহণ।