বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

রাজনের বাড়িতে ওরসে ভক্তের ঢল

rajon

নির্মমভাবে খুন হওয়া সিলেটের শিশু সামিউল আলম রাজনের গ্রামের বাড়ি বাদেআলীতে ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা থেকে ওরস শুরু হয়। চলবে বাদ ফজর পর্যন্ত। ওরস উপলক্ষে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো ভক্ত আসেন। গাইলেন গান, করলেন রাজনের জন্য দেয়া।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, রাজনের প্রপিতামহ সৈয়দ শেখ ছাইদ আলী শাহ ছিলেন একজন পীর। তিনি মারা যাওয়ার পর তার বসতভিটায় পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। নরপশুদের নির্যাতনে খুন হওয়া রাজনকেও ছাইদ আলী শাহ’র কবর পাশে সমাহিত করা হয়।

ছাইদ আলীর মৃত্যুর পর থেকে সেখানে ওরস মাহফিলের অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওরস মহাফিলের আয়োজনের জন্য একটি কমিটিও রয়েছে।

সেই কমিটির বর্তমান সভাপতি মন্তাজ আলী জানান, প্রতিবছরই সৈয়দ শেখ ছাইদ আলী শাহ’র মাজারে একদিনব্যাপী ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এবারও এ ওরস মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল।

তিনি আরো জানান, রোববার সন্ধ্যায় থেকে ওরস শুরু হয়। শেষ হয় বাদ ফজর। এবারের ওরসে কোরআন খতম, বাদ এশা থেকে জিকির, মিলাদ, নিহত রাজনের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়েছে। দোয়া শেষে শিরনী বিতরণের মধ্য দিয়ে ওরস মাহফিল শেষ হয় বলে জানান মন্তাজ।

তবে গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছে, প্রতি বছরের চেয়ে এবার বড় আকারে ওরস অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের ওরসে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তা আসেন। এছাড়াও বাউল শিল্পীরা এসে ওরসে গান পরিবেশন করেন। রাতে বাউল শিল্পিদের গান শুনতে কয়েক হাজার লোক নিহত রাজনের বাড়ির প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। তারা স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশিত গানগুলো শোনেন ও নাচেন।

অনুষ্ঠিতব্য ওরসে উপস্থিত ছিলেন- ওরস কমিটির সভাপতি মন্তাজ আলী, পরিচালক আব্দুল মালিক, কান্দিগাঁও ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার আব্দুর জাহির, বাদেআলী গ্রামের মুরব্বি মো. আলী, দুদু মিয়া, নিহত রাজনের পিতা শেখ আজিজুর রহমান, মুরব্বি আব্দুস সালাম, সহিদুর রহমান, শফিকুল হক, মাসুদ মিয়া, আসরাব আলী, রুস্তুম আলী, সাজ্জাদুর রহমান প্রমুখ।

এদিকে, ওরসের জন্য রাজনের কবর ও তার প্রপিতামহের কবর লাইটিং করা হয়েছিল। কবরস্থানের প্রবেশমূখে নির্মাণ করা হয় তোরণ। কবরস্থানের পাশে ক্ষেতের জমিতে তৈরী করা হয় মঞ্চ। ওরস উপলক্ষে বাসানো হয় দোকানপাটও। এছাড়াও রাজনের বাড়ির প্রবেশ মুখে ওরসের ব্যানার সাঁটানো হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে শিশু সামিউল আলম রাজনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। মাত্র ৪ মাস পর বহুল আলোচিত ওই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। এতে মামলার প্রধান আসামি প্রবাসী কামরুল ইসলামসহ চারজনকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। ১ জনকে যাবজ্জীবন, কামরুলের ৩ ভাইকে সাত বছরের এবং দুজনকে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দাণ্ডিত করা হয়। এছাড়া অপর ৩ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।