শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

যশোর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতিকে গুলি করে হত্যা

2_132657

যশোর শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আবদুল মান্নানকে (৪৫) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার বিকালে শহরের বেজপাড়া রানার অফিস মোড়ে মান্নানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। আবদুল মান্নান বেজপাড়া শহীদ মাহফুজ সড়কের আবদুল মজিদের ছেলে। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের অনুসারী বলে জানা গেছে। মান্নানের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বেজপাড়া এলাকাবাসী শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকালে বেজপাড়া রানার অফিস মোড় এলাকায় নিজস্ব ঠিকাদারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসেছিলেন আবদুল মান্নান। এ সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা অফিসে ঢুকে তাকে লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে গুলি করে। গুলি তার গলায় বিদ্ধ হলে তিনি লুটিয়ে পড়েন। দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তার অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন তাদের দেখতে পেয়ে ধাওয়া করে। তবে তারা মোটরসাইকেলে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন মান্নানকে উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু পথেই তিনি মারা যান। লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।যশোরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) রেশমা শারমিন জানিয়েছেন, দুর্বৃত্তরা আবদুল মান্নানকে গুলি করে ফেলে রেখে যায়। হাসপাতালে আনার পথে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আটকের জন্য অভিযান শুরু করেছে।এদিকে হাসপাতালে মান্নানের স্বজনদের আহাজারিতে চারপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে বলে এলাকাবাসীর ধারণা। মান্নান হত্যার ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আজ বেলা ১২টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারে আলটিমেটাম দিয়েছে। খুনিরা ভাড়াটে সন্ত্রাসী বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।হাসপাতাল চত্বরে মান্নানের স্ত্রী দিপ্তী বেগমসহ ও স্বজনদের কেউ কেউ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। খবর পেয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ভিড় জমায়। এ সময় হাসপাতাল চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। তাৎক্ষণিকভাবে বেজপাড়া এলাকাবাসী শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় তারা খুনিদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠুর নেতৃত্বে শহরে মিছিল বের হয়।
আসাদুজ্জামান মিঠু যুগান্তরকে বলেন, আবদুল মান্নান একজন সাহসী ও একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। গতকালও রাজপথের কর্মসূচিতে ছিলেন আজ (শনিবার) তার খুনের প্রতিবাদে আমরা মিছিল করছি। তিনি জানান, আজ (রোববার) সকালে লাশ নিয়ে মিছিল করা হবে। বেলা ১২টার মধ্যে পুলিশ খুনিদের গ্রেফতারে ব্যর্থ হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।এদিকে হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে তিনটি কারণ থাকতে পারে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে শহরের চোপদারপাড়া এলাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারী গুঙ্গা শাওন ৩-৪ মাস আগে পুলিশের গুলিতে আহত হয়। এরপর তার পা কেটে ফেলা হয়। এ ঘটনার জন্য তিনি মান্নানকে অভিযুক্ত করে আসছিলেন। এ নিয়ে মান্নানের প্রতি তার আক্রোশ ছিল। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে আসছে সম্প্রতি বেজপাড়া এলাকায় যে শান্তিশৃংখলা কমিটি গঠন করা হয়েছে ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন মান্নান। এ কমিটির তৎপরতায় বেজপাড়া এলাকায় শান্তি ফিরে এসেছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে। সম্ভাব্য তৃতীয় কারণ হল- মান্নান ছিলেন কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী। এই ব্যবসায় প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে খুনের ঘটনা ঘটতে পারে। নিহত মান্নানের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।