বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

মীরসরাইয়ে ৫ হাজার গরু-মহিষ নিয়ে খামারিদের বিক্ষোভ


নিজস্ব প্রতিবেদক ::
মীরসরাইয়ের চরাঞ্চলের জমি অধিগ্রহণের কারণে মহিষসহ গবাদিপশুর চারণভূমির রক্ষার দাবিতে এবং খামারিদের বিরুদ্ধে উপকূলীয় বনবিট কর্মকর্তাদের জরিমানা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন পাঁচশ খামারি। ১১ই জুন শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় খামারিরা পাঁচ হাজার মহিষসহ গবাদিপশু নিয়ে মীরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেন।
এ সময় খামারিদের দাবির পক্ষে একাত্মতা পোষণ করে সমস্যা সমাধানের জন্য খামারিদের সঙ্গে কথা বলেন মীরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান, ইছাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফা। উপস্থিত ছিলেন মীরসরাই সার্কেলের এএসপি লাবীব আব্দুল্লাহ, জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর হোসেন মামুন, বেজা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন প্রমুখ।
মীরসরাইয়ের ইছাখালীর চরাঞ্চলের ৩০ হাজার একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠছে বাংলাদেশের সববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর। অর্থনৈতিক অঞ্চলের চরাঞ্চলের জমি অধিগ্রহণের কারণে চরমভাবে হুমকির মুখে পড়েছে ১০ হাজার মহিষের চারণভূমি। ফলে বিপাকে পড়েছেন আয়ের একমাত্র উৎস মহিষ, গরু, ভেড়া পালনকারী পাঁশ খামারি। এ ছাড়াও সাগর উপকূলীয় বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ইছাখালী স্ুুইসগেটের শেষ মাথায় জেগে ওঠা চরে মহিষ প্রবেশ করে সৃজনকৃত উপকূলীয় বাগানের গাছ নষ্ট করার অজুহাতে একাধিক খামারিকে জরিমানার টাকা আদায় করার অভিযোগ করেছে মহিষ পালনকারী খামারিরা।
স্থানীয় খামারি সেফায়েত উল্লাহ মানিক ও আমির হোসেন জানান, ইকোনমিক জোন হওয়ার কারণে গরু-মহিষের চারণভূমি কমে যাওয়ায় পশু পালনে বিপাকে পড়েছি। তার ওপর সাগর উপকূলীয় বনাঞ্চলে গাছ না থাকলেও মহিষ প্রবেশের অজুহাতে শতাধিক খামারি থেকে ৩-৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায়সহ মামলা দিয়ে হয়রানি করছে উপকূলীয় বনবিভাগ।
আরেক খামারি মো. ফারুক জানান, অধিগ্রহণকৃত জমির বাইরেও প্রায় ১ হাজার একরের মতো জায়গায় চর জেগেছে। সেখানে খামারিদের গরু, মহিষ, ভেড়াসহ প্রায় ২০ হাজার গবাদিপশুর চারণভূমি হিসাবে উন্মুক্ত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
উপকূলীয় বনবিভাগের মীরসরাই রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল গফুর মোল্লা ও বনবিট কর্মকর্তা রনি পারভেজ জানান, চর জাগলে উপকূল ভাঙনরোধী গাছের চারা রোপণ করে উপকূলীয় অঞ্চলে সুপার ডাইক রক্ষা করা হয়। জরিমানার বিষয়ে খামারিদের অভিযোগ সত্য নয় বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফা জানান, খামারিরা গরু-মহিষ দিয়ে হাল চাষ, দুধ ও মাংস বিক্রি করে তাদের সংসার চলে। চারণভূমি না থাকায় খাদ্যের অভাবে মারা যাচ্ছে গরু মহিষ। এখানকার হাজারও গবাদিপশুর জন্য জেগে ওঠা চরে চারণভূমির দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান বলেন, আমাদের শিল্পাঞ্চলও প্রয়োজন আবার আমিষেরও প্রয়োজন। এছাড়া গবাদিপশুর পালনকারীরাও বাঁচতে হবে। ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের তালিকা করার জন্য বলেছি। এ সমস্যা নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন জানান, চট্টগ্রামে গরু মহিষের দুধ ও মাংসের জোগান অনেকাংশে এখান থেকে সরবরাহ হয়। বংশ পরম্পরায় মহিষ গরু পালনকারী এ গরিব মানুষদের সমস্যার কথা উপজেলা সমন্বয় সভায় সংসদ সদস্যকে অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।