শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

মীরসরাইয়ের উপকূলে জলদস্যুদের হাতে খুন ১ জেলে, মুক্তিপন দিয়ে ফিরে এলো ৩ জেলে

প্রতিনিধি : মীরসরাইয়ের উপকূলের সাহেরখালী ইউনিয়নস্থ সন্দিপ চ্যানেলে জলদস্যুরা জেলেদের উপর দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ৪ জেলেকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে গেছে কয়েকদিন পূর্বে। এদের মধ্যে থেকে ৩ জন গতকাল সোমবার (২৫ আগষ্ট ) মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসে। অবশিষ্ট জেলে শাহ আলম (৩২) পিতা নুরুল ইসলাম কে খুন করে উপকূলে ফেলে গেলে বুধবার ( ২৬ আগষ্ট) তার লাশ উদ্ধার করে এলাকাবাসী।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় গত সোমবার থেকে মীরসরাই উপজেলার সাহেখালী ইউনিয়নের সন্দীপ চ্যানেলের গভীরে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের উপর কোম্পানীগঞ্জ, চর ফ্যাশনের অস্ত্রধারী জলদস্যুরা এ হামলার ঘটনা ঘটায়। গত রবিবার দুপুরে জলদস্যুরা সাহেরখালীর জেলে জয়নাল আবেদীন প্রকাশ জালাল আহম্মদ, সবুজ, শাহ আলম ও মাসুদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মাঝ সাগর থেকে চর ফ্যাশনের দিকে তুলে নিয়ে যায়। জেলেরা জানায়, চিহ্নিত জলদস্যু সর্দার আনিসুল হকের নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে। জলদস্যুরা দুটি মোবাইল নম্বর থেকে সবুজের আত্মীয়স্বজনের কাছে ফোন করে ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এরপর তারা ৩ জেলেকে ছেড়ে দেয়। জানা গেছে, মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা জেলেরা সন্দীপ চ্যানেলে বড়শী দিয়ে পাঙ্গাস মাছ ধরতো। এদিকে ফিরে না আসা জেলেকে তার পরিবার হন্যে হয়ে খুজতে থাকে। অবশেষে মঙ্গলবার (২৬ আগষ্ট ) উক্ত জেলে শাহ আলম (৩২) পিতা নুরুল ইসলাম এর লাশ সাহেরখালীর উপকূলে পাওয়া যায়। এসময় লাশের শরীরের বিভিন্ন অংশে জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়। তবে এ ঘটনায় কেউ নিখোঁজ রয়েছেন এ রকম তথ্য তার কাছে নেই বলে জানিয়েছেন সোনাগাজীর ওসি জাফর আহমদ। এদিকে পৃথক ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার ১৩ নং মায়ানী ইউনিয়নের মির্জানগর জেলেপাড়ার লক্ষণ জলদাশ, মনা জলদাশসহ ৩ জেলে সন্দীপ চ্যানেলে ইলিশ ধরতে গেলে জলদস্যুরা তাদের উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে খুব দ্রুত নৌকা চালিয়ে এ ৩ জেলে কোনমতে বাড়ি ফিরে। গত ১০ দিন পূর্বেও জীবন জলদাশকে সাহেরখালীর অস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। এবিষয়ে মীরসরাই থানায় মামলা হলেও এখনো এ দুই আসামী মানিক ও মামুন গ্রেপ্তার হয়নি। প্রতি বছরই ইলিশের মৌসুম আসলে জালসহ জেলেদের তুলে নেওয়া, মাঝ সাগরে ছুড়ে ফেলে দেওয়া এবং মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসার ঘটনা ঘটে। এ বছর ইলিশের ভরা মৌসুমে সাগরে একদিকে মাছের আকাল, অন্যদিকে সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হামলায় জেলেরা অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন। ১৬ নং সাহেরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল মোস্তফা জানান উক্ত উপকূলীয় সন্ত্রাসীরা খুবই বেপরোয়া। এদের প্রতিরোধ করা না গেলে জেলেরা আরও অসহায় হয়ে পড়বেন।
এই বিষয়ে মীরসরাই থানার ওসি ইমতিয়াজ ভূঞা জানান ঘটনাস্থলটি বঙ্গোপসাগরের মধ্যে বলে আমরা সব সময় আমরা এই জলদস্যু দমনে যথাযথ উদ্যোগ নিতে পারিনা। এখানে কোষ্টাল ফোর্স প্রয়োজন বলে দাবী করেন। তবে এই অপহরণ ও খুনের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।