মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

ফটিকছড়ির সৈয়দ মেমোরিয়াল বিদ্যালয়ে নরেন আবৃত্তির কর্মশালা

সাইফুদ্দিন ফরহাদ ::444 “আমি বাংলায় কথা কই, আমি বাংলার কথা কই/ আমি বাংলায় ভাসি, বাংলায় হাসি, বাংলায় জেগে রই/আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার/আমি সব দেখেশুনে খেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার” গীতিকার প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের আকুল করা সে প্রাণের বাংলা আজ ভিনদেশি ভাষার আগ্রাশনে তার শুদ্ধতা হারাতে বসেছে। বর্তমান তরুণ প্রজন্ম বাংলা আর ইংরেজির সংমিশ্রণে এক অদ্ভুত ভাষা ব্যাবহার করছে, অথবা বাংলা শব্দগুলো এমন ভঙ্গিতে উচ্চারণ করে থাকে যে শব্দটি বাংলা অভিধানভুক্ত কোন শব্দ বলে মনেই হয়না। অন্যদিকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গুলোতে প্রমিত উচ্চারণের ব্যাপারে আনেকটা উদাসিন। ভাষার এ ক্রান্তিকালে বাংলা ভাষার শুদ্ধ উচ্চারণ চর্চা সময়ের চাহিদা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্ত বিষয় মাথায় রেখে বাংলা ভাষার গৌরব অক্ষুন্ন রাখতে নরেন আবৃত্তি একাডেমি বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও নগরীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত শুদ্ধ উচ্চারণ ও আবৃত্তি কর্মশালার আয়োজন করে চলেছেন। এরই অংশ হিসেবে গত ১৭ই ডিসেম্বর ফটিকছড়ির নাজির হাট উপজেলায় অবস্থিত সৈয়দ-সৈয়দা মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে একদিনের কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। । দিনব্যাপি এই দুই পবের্র কর্মশালার প্রথম পর্বে ধ্বনি, স্বরোৎপাদন শিক্ষা, কন্ঠশীলন এবং মধ্যাহ্ন ভোজের পর দ্বিতীয় পর্বে প্রাণায়াম, ডায়াফ্রাম ব্রিদিং, উচ্চারণ বিধি, শব্দের বৈভব, এ্যামফেসিস, বিরতি, ছন্দ, রস, আবৃত্তি, উপস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এ সকল বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন নরেন আবৃত্তি একাডেমির পরিচালক মিশফাক রাসেল, মিতাশা মাহরিন, দিদারুল আলম, মো: সাইফ উদ্দিন ফরহাদ। কর্মশালার উদ্ধোধন ঘোষণা করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম ভাষা সৈনিক এজাহারুল হকের সুযোগ্য কন্যা ও উক্ত বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সদস্য শাহানা আনোয়ার। কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব আবদুল কাদের, বিভিন্ন বিষয়ের শিক্ষকমন্ডলী এবং প্রত্যেক শ্রেণীর প্রথম সারির শিক্ষার্থীবৃন্দ। কর্মশালা শেষে সভাপতির বক্তব্যে শাহানা আনোয়ার বলেন,“যদিও আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি কিন্তু বাংলা ভাষা শিক্ষায়ও যে পৃথিবীর অন্যান্য শক্তিশালী ভাষাগুলোর মত এতো সুন্দর মার্শাল একটা ব্যাপার আছে তা আমার জানা ছিলনা। আজ আমি তা শিখলাম।” তাছাড়া তিনি ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষদের প্রদর্শিত নিয়মানুসারে সপ্তাহের কোন একটা দিন নির্দিষ্ট করে নিয়মিত শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণ ও আবৃত্তি চর্চা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে,“নরেন আবৃত্তি একাডেমির প্রত্যন্ত অঞ্চলে অঞ্চলে বাংলা ভাষার শুদ্ধ উচ্চারণ বিষয়ে প্রশিক্ষণের প্রয়াসকে সাধুবাদ জানান।” প্রশিক্ষক মিশফাক রাসেল প্রত্যন্ত গ্রামের একটি বিদ্যালয়ে বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান জানিয়ে কর্মশালার আয়োজন করে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য সভাপতি শাহানা আনোয়ারের প্রশংসা এবং আয়োজকদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি আরও বলেন এরকম প্রতিটি বিদ্যালয়ের পরিচালা পর্ষদ যদি বাংলা ভাষার প্রতি যতœশীল হন তাহলে বাংলা ভাষার শ্রুতি মাধুর্যতা কালের অতলে আর হারিয়ে যাবেনা।