শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ‌‘ধারা’টা ভাঙবেন সাকিবরা!

1d32dbc0789e3107b587a68c5e666ad1-Shabbir-rahman
বাংলাদেশের সেরা ইনিংসগুলোর মধ্যে সাব্বিরের ইনিংসটিই একটু আলাদা। ছবি: শামসুল হক।টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের এখনো সেঞ্চুরি নেই। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের এই ক্রিকেটে বাংলাদেশের দুর্বলতা হয়তো এই পরিসংখ্যান দিয়েও কিছুটা বোঝা যায়। সর্বশেষ ম্যাচে সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে আউট হয়ে গেছেন সাব্বির রহমান। কিছুটা আক্ষেপ থাকতেও পারে।তবে একটা জায়গায় সাব্বির নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ স্কোরের ক্ষেত্রে যে আক্ষেপটি একটু নিয়মিত হয়ে যাচ্ছিল, সেই হার তো সঙ্গী হয়নি! শুনলে অবাক হতে পারেন, একমাত্র সাব্বিরের ইনিংসটি ছাড়া বাংলাদেশের সেরা পাঁচ ইনিংসের বাকি চারটিই শেষ পর্যন্ত ছিল পরাজিত দলের স্কোরে। আর একটু শঙ্কা জাগাতে পারে এই রেকর্ডটি, এর তিনটিই ছিল আজকের ম্যাচের প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের বিপক্ষে!বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে এখনো সর্বোচ্চ ইনিংস তামিম ইকবালের ৮৮। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওই দুর্দান্ত ইনিংস খেলেও দিনশেষে তামিম ছিলেন পরাজিত দলে। তামিমের আর সাব্বিরের ইনিংস দুটি বাদে সেরা পাঁচ ইনিংসের তিনটিই পাকিস্তানের বিপক্ষে-২০১২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর পাল্লেকেল্লেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাকিবের ৮৪; ২০০৭-এর ২ সেপ্টেম্বর নাইরোবিতে নাজিমউদ্দিনের ৮১, আর ওই একই মাসে ১৮ দিন পর কেপটাউনে জুনায়েদ সিদ্দিকীর ৭১!টি-টোয়েন্টি বিবেচনায় দুর্দান্ত তিনটি ইনিংস সন্দেহ নেই। কিন্তু কী আফসোস, তিনবারই হেরে গেছে বাংলাদেশ! তিনটি ইনিংসের গল্প তাই একই। তিন বছর আগের সাকিবের ৫৪ বলে ৮৪ রানের ইনিংসটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে টি-টোয়েন্টির দাবি মানা ইনিংস দলের আর কেউ খেলতে পারেননি। শুধু তামিম ১২ বলে ২৪ করেছিলেন। বাকি যাঁরা রান করেছেন সবার ইনিংসই ছিল নিদেন ‘ওয়ানডে’ গতির। বাংলাদেশ তবু ১৭৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল পাকিস্তানকে। কিন্তু এক ইমরান নাজিরের ৩৬ বলের ৭২ রানের ইনিংসটিই জয় ছিনিয়ে নিয়ে গেল।২০০৭-এর দুটি ম্যাচের গল্পও একা লড়ে যাওয়ার। ২ সেপ্টেম্বরের ম্যাচটিতে পাকিস্তানের দেওয়া ১৯২ রানের ‘প্রায় অসম্ভব’ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নাজিমউদ্দিন ছাড়া আর কেউ ওভাবে দাঁড়াতে পারলেন কই! বাংলাদেশ ওপেনারের ৫০ বলে ৮১ রান আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই আশা থেমে গেছে ৩০ রান দূরে।আন্তর্জাতিক অভিষেক ম্যাচেও জুনায়েদ সিদ্দিকী একা লড়ে গেলেন। ৪৯ বলে তাঁর ৭১ রানের ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশ ১৪০ রান করতে পেরেছিল। পাকিস্তান সেটি পেরিয়ে গিয়েছিল ১ ওভার হাতে রেখে।টি-টোয়েন্টিতে গত বছরের ২৪ এপ্রিলের ম্যাচটির আগে সাত সাক্ষাতে বাংলাদেশ কখনোই হারাতে পারেনি পাকিস্তানকে। গেরোটা ছুটেছে মুস্তাফিজুর রহমানের অভিষেক ম্যাচে। এই ম্যাচে একটা ‘দল’ হয়ে খেলেছে বাংলাদেশ।কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন বোলাররাই, পাকিস্তানকে মাত্র ১৪১ রানে অলআউট করে দিয়ে। এরপর সাকিব ৪১ বলে ৫৪ রান করেছেন। তবে এবার আর তাঁকে একা লড়তে হয়নি। সঙ্গ দিয়ে গেছেন সাব্বির, ৫১ করেছেন তিনি ৩২ বলে।জয়ের মন্ত্রটাও ওখানেই—দল হয়ে ওঠা। আজ এমন দল হয়ে খেলতে পারলেই জিততে পারে বাংলাদেশ। সঙ্গে একটা প্রেরণা হতে পারে এই তথ্যটি—এটি সেপ্টেম্বর মাস নয়। এর আগে ওই তিনটি সেরা ইনিংসই তো সেপ্টেম্বরে হয়েছিল। দেখা যাক, এবার মার্চে কেউ ভাগ্যটা বদলাতে পারেন কি না। ধারাটা ভাঙতে পারেন কি না সাকিব-সাব্বিররা। এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠতে সেটি যে বেশ দরকার।