বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

নির্দলীয় সরকার প্রশ্নে কোনো আপস নয় : খালেদা জিয়া

2_41840

নির্দলীয় সরকারের দাবিসহ ক্ষমতাসীনদের অন্যায় জুলুমের সঙ্গে কোনো আপস হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে চলমান আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা দেশের মানুষের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা দায়িত্ব চালিয়ে যাব। এ নিয়ে কোনো রকম আপসের সুযোগ নেই। আপস করা মানেই অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া।
সরকারের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, নির্দলীয় সরকারের দাবি ন্যায়সঙ্গত। এ দাবি আপনাদের ছিল, আমাদের ছিল না। আপনাদের দাবি সংবিধানে সংযোজিত করেছিলাম। আজ সেই বিধানকে সংবিধান থেকে তুলে দিয়ে সরকার অন্যায় করেছে।সন্ধ্যা ৬টায় খালেদা জিয়া জাতীয় প্রেস ক্লাবে আসেন। এখানে পৌঁছলে ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার বিরোধীদলীয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর তাকে নিচতলায় সাংবাদিক লাউঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে কুশল ও মতবিনিময় করেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে চা-চক্রে মিলিত হন খালেদা জিয়া।মতবিনিময়ের প্রথমে দেশের অবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিকদের মতামত শোনেন বিরোধীদলীয় নেতা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও নিউজ টুডের সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, সিনিয়র সাংবাদিক এরশাদ মজুমদার, মোস্তফা কামাল মজুমদার, মাহফুজউল্লাহ, মাহমুদ শফিক, খন্দকার মনিরুল আলম, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, এমএ আজিজ, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, আবদুল আউয়াল ঠাকুর, আবদুস শহিদ, বাকের হোসাইন, এম আবদুল্লাহ, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, ইলিয়াস খান, মাহবুব আলম, মির্জা সেলিম রেজা, নজরুল ইসলাম মুকুল, শফিক আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।রিয়াজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭৫ সালের মে থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশের যে অবস্থা ছিল এখন তার চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা। এ অবস্থায় দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষায় বিরোধীদলীয় নেতাকেই মুক্তির পথ দেখাতে হবে। তিনি বলেন, একজনের গোঁয়ার্তুমির জন্য দেশ বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে। খালেদা জিয়াকে বিপর্যয়ের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।রুহুল আমিন গাজী বলেন, বর্তমান সরকারের সময় সাংবাদিকরা আক্রমণের শিকার। অনেক মিডিয়া বন্ধ ও সম্পাদকসহ সাংবাদিকদের বাসায় হামলা হচ্ছে। টকশোতে পর্যন্ত সাংবাদিকদের কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। এ ক্রান্তিকালে দেশের মানুষ বিরোধীদলীয় নেতার দিকে তাকিয়ে আছে।সাংবাদিকদের বক্তব্য শুনে খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা সবাই দেশকে ভালোবাসেন। দেশের অনেক তথ্য আপনারা জানেন। আমি সে সব বিষয়ে জানতে আজ এখানে এসেছি। আপনারা যে চিন্তাধারা ধারণ করেন, তা নিয়ে এগিয়ে যাবেন, এটাই আমি বিশ্বাস করি।সাংবাদিকদের বক্তব্যের সঙ্গে তিনি একমত পোষণ করে বলেন, বিভিন্ন সময়ে আমি এখানে এসেছি। আপনাদের মতামত শুনেছি। তাই এটি যেমন আপনাদের সেকেন্ড হোম, তেমনি আমার কাছেও এটি নিজের বাসার মতো।জনগণের আন্দোলনে নিজের অবস্থান তুলে ধরে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, আমার কাছে পদ-পদবি বড় নয়। প্রথম দিকে যখন আমি রাজনীতি শুরু করেছিলাম, তখন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্যই সংগ্রাম করেছি। আজ এখানে এসেছি দেশের অবস্থা সম্পর্কে আপনাদের কাছ থেকে জানতে। এই জুলুমবাজ ও অত্যাচারী সরকারকে অতিদ্রুত বিদায় করে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রয়াত গিয়াস কামাল চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি বলেন, তার মৃত্যুতে আমি মর্মাহত। গণতন্ত্রের আন্দোলনে তিনি কাজ করে গেছেন। তার মতো ব্যক্তির আজ প্রয়োজন ছিল।অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিয়াস করীম, সাংবাদিক শফিক রেহমান, টিএইচ আইয়ুব, শিরিন সুলতানা, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মাহবুবুল হাসান পিংকু, শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে বিরোধীদলীয় নেতা গুলশানে নিজের কার্যালয়ে রওনা হয়ে যান।
উৎস- যুগান্তর

Leave a Reply