শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

মীরসরাইতে ২৫ সিএনজির বিরুদ্ধে মামলা : মহাসড়কে যাত্রীদের দূর্ভোগ

1211112111নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ একদিকে সরকারের অনড় অবস্থান, অপরদিকে হাজার হাজার সিএনজি চালকদের পরিবারের আসন্ন মানবেতর আর্তনাদ। আবার যাত্রীদের সীমাহীন দূর্ভোগ। সব মিলিয়ে মহাসড়ক রুটে চলছে একটি জগাখিচুড়ি সংকট।
গতকাল পর্যন্ত গত ৫ দিনে মীরসরাই উপজেলার মীরসরাই ও জোরারগঞ্জ থানাধিন মহাসড়ক এলাকায় মামলা হয়েছে ২৫ সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে । উপরের নির্দেশনা অনুযায়ী ধীরে ধীওে মহাসড়কে চলাচলকারী সিএনজিগুলোর বিরুদ্ধে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে এই এ্যাকশন প্রক্রিয়া।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মোঃ ফরিদ জানান গতকাল সোমবার দিনভর শুধুমাত্র সিএনজি ষ্টেশানে যাতায়াত ছাড়া কোন সিএনজি মহাসড়কে উঠতে দেয়া হয়নি। ইতিমধ্যে সিএনজি চালকরা ও নিয়মের মধ্যে চলে আসছে বলে তিনি দাবী করেন। আবার তবু ও গত ৩ দিনে নিয়মে আসার জন্য ২০ টি সিএনজিকে প্রসিকিউরের মামলা দেয়া হয়েছে বলে জানান। মীরসরাই থানার মহাসড়কে দায়িত্বরত এসআই আলিউর রহমান জানান গত ২ দিনে ২টি সিএনজিকে মামলা দিয়েছেন এই থানাধিন মহাসড়ক এলাকায়। জোরারগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার এসআই আব্দুল্লাহ জানান সেখানে মহাসড়কে গতকাল সোমবার ৩টি মোটর বাইকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। সর্বমোট মামলা সংখ্যা ২৫টি।
সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এই রুটের সিএনজি চলাচল এদিকে মীরসরাই থেকে সীতাকুন্ড, বারইয়াহাট সহ বিভিন্ন অঞ্চলের সিএনজি নির্ভর যাত্রীদের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে দেখা যায় গতকাল ও । বিকল্প পরিবহন না থাকায় এই দূর্ভোগ বাড়ছে দিনে দিনে। অফিস পাড়ার কর্মজীবি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সহ সকলেই পড়েছে এই দূর্ভোগের কবলে ।
গতকাল বিকাল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দেড় ঘন্টা যাবত বাসের অপেক্ষায় থাকা মীরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষিকা অদিতা চক্রবর্তি বলেন আমি গত দেড় বছর ধরে সীতাকুন্ড থেকে সিএনজিতে করে আসি। গত ৩ দিন দূর্ভোগের সীমা নেই। আজ ও দেড় ঘন্টা দাঁড়িয়ে অবশেষে একটি বাসে পুরুষদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে কয়েকজনের সাহায্য নিয়ে অনেক কষ্ট কওে নোয়াখালীর একটি বাসে উঠে বাসায় ফিরে যাই। চট্টগ্রাম থেকে আসা সরকারি কর্মকর্তা জনাব ওহাব জানান সকালে চট্টগ্রাম থেকে মীরসরাই আসা পর্যন্ত বিভিন্ন হাটবাজার গুলোতে ছেলে বুড়ো সবাইকে বিকল্প পরিবহন না থাকায় সীমাহীন দূর্ভোগের স্বীকার হতে হয়েছে।
ভোগান্তির স্বীকার অনেক সাধারন মানুষকে ঝুকিপূর্ণভাবে পিকআপ, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে করে ও গন্থব্যে যেতে দেখা গেছে।
এদিকে গত কয়েক দিন ধরে বাধ্য হয়ে সিএনজি চালানো থেকে বিরত থাকায় অনেক সিএনজি চালকের পরিবার ও চালকরা দিশেহারা। মীরসরাই ষ্টান্ডে দিশেহারা এমন কিছু সিএনজি চালকের সাথে কথা বললে অনেকে অশ্রুসজল নয়নে জানায় তাদের কষ্ট ও দিশেহারা ভবিষ্যতের কথা। শেখটোলা গ্রামের সিএনজি চালক জামাল উদ্দিন অশ্রুসজল নয়নে বলে আমার ২য় শ্রেণীতে পড়া পুত্র মেহেদীর ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য গ্রামীন ব্যাংক থেকে ১ লাখ টাকা ঋন নিয়েছি। ছেলেকে ও বাঁচাতে পারিনি । কিন্তু সপ্তায় ছাব্বিশ শ টাকা করে কিস্তী দিতে হয়। কিভাবে পরিশোধ করবো এই টাকা এখন। নাজিরপাড়ার সিএনজি চালক মিলন হোসেন ( ৩২ ) জানায় ইসলামী ব্যাংক ও এসএস থেকে ঋন নিয়ে বোনের বিয়ে দিয়েছি মাত্র দুমাস আগে। মাসে ১২ হাজার টাকা কিস্তি চালাতে হয় এখন কি করে এই ঋণ এর কিস্ত দিব আর খাব কি আল্লাহই জানে। চালক আবছার, বাবুল জানায় মেইন রোডে দূরে কাছের ভাড়া থেকে মাসে গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় হতো। এখন তো গ্রামের ভেতর মাসে ৫ হাজার টাকা রোজগার করা ও কঠিন হবে । কিন্তু পরিবারের তো খরচের কমতি নেই। তার উপর সবারই কিস্তি আছে। কে কিভাবে বাঁচবে আল্লাহই জানে।