শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরির ক্যাপ্টেনসহ দুই ক্রু গ্রেপ্তার

image_74513._74328169_74328168

৪৭৬ জন যাত্রী নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার ডুবে যাওয়া ফেরির ক্যাপ্টেন ও দুই ক্রুকে আজ শনিবার সকালে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদ সংস্থা। ইয়োনহ্যাপ নিউজ এজেন্সি জানায়, ক্যাপ্টেন লি জোন সেওকের বিরুদ্ধে খামখেয়ালি, দায়িত্বে অবহেলা, জলসীমা আইন লঙ্ঘনসহ ৫ ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। একটি স্থানীয় আদালত ক্যাপ্টেন ও তার দুই সহকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ক্যাপ্টেন ছাড়াও ফেরির অপর দুই ক্রু সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে জানাচ্ছে সংবাদ সংস্থাটি।বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার হওয়া ৬৯ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন লি জুন-সিওকের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চেয়েছিলেন, ফেরিটি প্রথম বিপদসংকেত পাঠানোর ৪০ মিনিটের বেশি সময় পরও কেন যাত্রীদের নিজ নিজ আসন ও কক্ষে অবস্থান করতে বলা হয়েছিল? জবাবে লি জুন-সিওক বলেন, ঘটনাস্থলে কোনো উদ্ধারকারী জাহাজ ছিল না। আশপাশে মাছ ধরার কোনো নৌকা বা অন্য জাহাজ ছিল না। ওই সময় জোয়ারের তোড় ছিল বেশি। পানি ছিল ঠাণ্ডা। এসব বিবেচনায় নিয়ে যাত্রীদের ওই আদেশ দিয়েছিলেন তিনি।
ক্যাপ্টেন লি জন সেওককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করার পর বৃহস্পতিবার তাকে টিভিতে ফেরি দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর কাছে ক্ষমাও চাইতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, আমি এ ঘটনার জন্য অত্যন্ত দুঃখিত এবং লজ্জিত! আমি জানি না আমার কী বলা উচিত! জানা গেছে, ফেরিটি ডুবে যাওয়ার সময় ক্যাপ্টেনের পরিবর্তে তা চালানোর দায়িত্বে ছিলেন একজন জুনিয়র কর্মকর্তা।বিশেষজ্ঞদের অনেকে দাবি করছেন ফেরিটি দ্রুতবেগে ঘোরানোর সময় এটি ডুবে যেতে পারে। আবার শক্ত কোনো বস্তুর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ফেরিটি ডুবে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। ডুবে যাওয়া ফেরিটির প্রায় ২৭০ জন যাত্রী এখনো নিখোঁজ, যাদের বেশিরভাগই দক্ষিণ কোরিয়ার একটি স্কুলের শিক্ষার্থী। স্কুল থেকে আনন্দ ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ওই শিক্ষার্থীদের।এদিকে শুক্রবার ওই স্কুলের সহকারী প্রধানশিক্ষক আত্মহত্যা করেছেন। তিনি ডুবে যাওয়া ফেরিতেই ছিলেন তবে তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল। নিখোঁজ যাত্রীদের সন্ধানে সাগরে তল্লাশি চলছে। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কোস্টগার্ড কর্মকর্তা কো মিয়ুং সুক শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলেন জানান, ডুবুরিদের জাহাজের ভেতরে যেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। তিনি বলেন, দুজন ডুবুরি জাহাজের কার্গো রুমের ভেতরে ঢুকতে পারলেও বাধা-বিপত্তির কারণে তারা এর বেশি দূর যেতে পারেনি এবং এখন পর্যন্ত নতুন করে আর কাউকেই উদ্ধার করা যায়নি।উল্লেখ্য, ছয় হাজার ৮২৫ টনের সেউল নামের ফেরিটি গত বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ায় উপকূলে ডুবে যায়। ফেরিডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ জনে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ২৭৩ জন। তাদের অধিকাংশই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী। অবকাশ যাপনের জন্য জেজু দ্বীপের উদ্দেশে তারা ওই ফেরিতে চড়ে ইনচিওন বন্দর থেকে রওনা হয়েছিল।