বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

ঘুরে আসুন রাবির প্যারিস রোড

photo-1457960294

নগরীর স্বাভাবিক জীবনের ফাঁকে এক চিলতে প্রশান্তির জন্য ঘুরাঘুরির প্রয়োজন? ঘুরার জন্য প্রকৃতির মাঝে যেতে চান? কেননা প্রকৃতি আমাদের বিনম্র হতে শিক্ষা দেয় । কাজের ফাঁকে নগরীর বাইরে চলে আসুন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় যেন প্রকৃতির এক নিবিড় মেলাবন্ধন। অপরূপ সৌন্দর্যের এ লীলাভূমিতে ঘুরে আসুন সৌন্দর্যের প্রতিমা প্যারিস রোড।

নির্মল বাতাস। পিচঢালা পরিষ্কার রাস্তা। সুবিশাল গগনশিরীষ গাছ  রাস্তার দুই ধারে। সড়কের দুই ধারে বেড়ে উঠা গাছগুলো যেন একে অপরকে আলিঙ্গন করতে মরিয়া। গাছগুলোকে রৌদ্রস্নান করাতে সূর্যমামার কত প্রচেষ্টা। সূর্যের আলো কখনো গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে রাস্তায় নেমে আসছে, কখনো বা পাতায় আটকে যাচ্ছে। এমনই আলো-ছায়ার খেলায় সৌন্দর্যের প্রতিমা হয়ে জেগে আছে একটি রাস্তা। বলছিলাম সৌন্দর্যমণ্ডিত প্যারিস রোডের কথা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক দিয়ে প্রবেশের সময়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটা প্রাথমিক চিত্র ফুটে উঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক দিয়ে ঢুকে কিছুটা এগিয়ে বামদিকে চোখে পড়ে সুবিস্তৃত একটি সড়ক। সড়কের দুই ধারে গগনশিরীষ গাছগুলো দেখলেই যেন মন ভরে যায়। মনে হয় গাছগুলো যেন রাস্তাটিকে পরম আদরে মুড়িয়ে রেখেছে। হাজারো শিক্ষার্থীর বয়ে বেড়ানো এ রাস্তাটির নামকরণ নিয়ে রয়েছে এক ইতিহাস।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায় ১৯৬৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণের লক্ষে ক্যাম্পাসের কাজলা রোড থেকে শের-ই-বাংলা হল পর্যন্ত এই গগনশিরীষ গাছ লাগানো হয়। তৎকালীন উপাচার্য এম শামসুল হক ফিলিপাইন থেকে কিছু গাছ নিয়ে আসেন। তিনি এইগাছগুলো রোপণের দায়িত্ব দেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যানকে। তাঁর হাত ধরেই লাগানো হয় গাছগুলো। রাস্তাটির নাম প্যারিস রোড কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাদিরউজ্জামানের নেতৃত্বে গাছগুলো লাগানো হয় যা শিগগিরই ক্যাম্পাসের দৃষ্টিনন্দনে পরিণত হয় । রাস্তাটির সঙ্গে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের রাস্তাগুলোর অনেকটা মিল খুঁজে পাওয়া যায় বলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এটিকে প্যারিস রোড বলতে থাকেন। সেই থেকে রাস্তাটি প্যারিস রোড নামে পরিচিত হয়ে উঠে।

ধারণা করা হয় দেশের আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো প্রতিষ্ঠানে এ রকম সুউচ্চ গাছের বিন্যাস নেই। কাজলা গেট থেকে শুরু করে শের-ই-বাংলা হল পর্যন্ত এ রকম সৌন্দর্যমণ্ডিত রাস্তা সহজেই যে কারো মন কেড়ে নেয়। ক্যাম্পাসের অতীত বর্তমানের শিক্ষার্থী তো বটেই বাইরের দর্শনার্থীদের কাছে এটি একটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। প্রতিবছর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের হাজার হাজার শিক্ষার্থী এখানে শিক্ষা সফরে আসে।

কীভাবে যাবেন?

অপরূপ সৌর্ন্দযের লীলাভূমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ, প্যারিস রোড, সাবাশ বাংলাদশে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা, বধ্যভূমি প্রভৃতি। প্যারিস রোড দেখতে চাইলে আপনি বাস বা ট্রেনে আসতে পারেন। ঢাকার গাবতলী থেকে রাজশাহী আসতে ভাড়া বাসভেদে ৪০০-৫০০ টাকা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক দিয়ে ঢুকে কিছুটা এগিয়ে বামদিকে চোখে পড়ে সুবিস্তৃত একটি সড়ক। সবুজের  চাদরে মোড়ানো এ রাস্তাই প্যারিস রোড। প্যারিস রোডের পাশাপাশি ঘুরে আসতে পারেন রাজশাহীর অন্যান্য দর্শনীয় স্থান।বাঘা মসজিদ, পুঠিয়া রাজবাড়ী,পদ্মার চর, চিড়িয়াখানা, সারদা পুলিশ একাডেমি। এ সবই কাছাকাছি বলে একসঙ্গে ঘুরে দেখা সম্ভব।