শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

কবি জেবাউল নকিব এর কবিতা “থ্রীপল ডট”

81285091680734_n

কবি জেবাউল নকিব এর কবিতা “থ্রীপল ডট”

দশ তলা উপর থেকে আমি পড়ছি
ক্রমে— ধুলে পড়ছে আমার শরীর
বহুদিন পর জ্যামিতিক রেখায় দুঃখ আঁকা
নয় তলায় কার্নিশ থেঁতলে দিচ্ছে কোমর হাত পা
আট তলায় মুখ ও নাক থেকে বেরোচ্ছে রক্ত
আমি পড়ছি। দশ তলা উপর থেকে
সাত তলায় রেখে যাচ্ছি তোমাদের তোষামোদি প্রেম
ছয় তলায় আহ্লাদী স্নেহাশিস ভণ্ড অভিনয়
পাঁচ তলায় কুকর্মের ফল হিসেবে আমাকে ক্ষত করে যাচ্ছে—
চার তলায় অন্তর আত্মা নিয়ে তেড়ে আসে— সমূহপাপ
তিন তলায় রেখে যাচ্ছি এক করুণ অতীত জীবন
দোতলায় ভায়োলিন তারে তারে বিষাদ সংক্রমণ

যুদ্ধ বেমানান
আত্মহত্যার চেয়ে আর বড় কোন মুক্তি নেই
বিম্বিসার রাত শেষ হলে হাতড়ে দেখো পুরনো ঘামে ভেজা শার্ট
আমাকে ক্ষত করে যাচ্ছে বিগত চীতকার পাপ
এখনো পড়ছি। আজিব দশ তলা থেকে পড়তে আর কতক্ষণ লাগে?
মুখ ও নাক থেকে রক্ত ঝরে ঝরে
সাক্ষী— রাখে যাচ্ছে দালানের সকল কংক্রিট
এই মৃত্যু বেঁচে থাকা
এই রাত ভর মরে বাঁচা
এই অবিশ্বাসী পরকীয়া

অপেক্ষায় আছে খুড়ে খেতে বেঈমান কাক
ধুলছি আমি। পড়ছি আমি। কাকও ধুলছে। পড়ছে কাকও।
প্রস্তুত হও পৃথিবীর সকল মাতাল ক্ষুধার্তরা
লিস্ট করো কারা কারা আগে খাবে—
গুজে দিও সামনে এক খণ্ড এলিট মহল

বুকশেলফ
রেখে দাও
ভাজে ভাজে
সকল অপ্রয়োজনীয় আমি
মস্তিষ্ক দৌড় থেমে গেছে
শিরা ক্রমানুসারে নীরবতা পড়তে শিখে গেছে
আরো পড়ুন
আরো পৃষ্ঠা উল্টান
চশমার গাঢ় ফ্রেম চেপে
লক্ষ করুন সকল অক্ষর
দাঁড়ী কমা
হাইফেন
ফুলস্টপ
স অ অ অ অ ব
বিস্তারিত আসছে ওয়েট

লাল শিরোনামে ফ্রন্ট পেজ দেখুন
মৃত্যু সংবাদ – হাত বাড়িয়ে ধরুন সন্ধ্যাক্রান্ত সমীকরণ

কেউ বলছে বৌ পরপুরুষের সাথে শোয়ায় আত্মহত্যা যুবকের
কেউ বলছে এ কিছু না দৈনিক মরছে— ফ্যাশন
কেউ বলছে ধর্ষণ করেছে মধ্যবিত্ত হাত
কেউ বলছে ডিপ্রেশন আহ উফ শেষ
কেউ বলছে মৃত্যু স্বাদে মুক্তি পেয়েছে— আপসোস
সমাজ ও রাষ্ট্র ধারনা করে নিয়েছে কল্যাণ কর্ম স্বহত্যা
জনসংখ্যা রোধে এগিয়ে আসুন!
সরকার বলেছে বরাবরের মত বিরোধী দলের কাজ
বন্ধু সমাজ ধিক্কার দিয়ে কয় হালায় এক নম্বর গাঞ্জাটি

পড়ে গেছি
নি
চে।
ছিলাম দশ তলায়
একটা হাত কাঁটা পড়ে ঝুলছে চারতলার রটে
পুলিশ এলো। ইনভেস্টিগেশনের প্রস্তুতি নাও
ময়নাতদন্তে নাড়িভুঁড়ি বের করে রিপোর্ট করো ধান্ধাবাজি

জ্যান্ত মানব তেড়ে আসে গলির অন্ধকার
যুদ্ধসময়ের ভ্রান্তি বুলেট সমেত চিপারাস্তায়
“বাস্টার্ড — চুদির্ভাই
জবরদস্ত ক্যাঁচাল থুইয়া ডাইনে চাপ
দম বন্ধ করে হাঁসফাঁস জুৎমতো ঠেলে ধর”

পেটের ভেতর দিয়ে আসে— যায় খরা
যাতায়াত করে শ্যাওলা পচাগন্ধ
ভ্যানিশ করে দিতে শ্বাসে শ্বাসে
আগুন— জ্বালাচ্ছে ক্রমশ
ভাবচক্কর দেইখা অ্যাটাক করে পুরান প্রেমিকা
রেলের ব্রিজে থেঁতলে দ্যায়— নিগূঢ় শরীর
আঁতকে উঠে
চারতলায় আশ্রয় খুঁজে নেয়
শোকমঞ্চে শুরু করে দ্যায় থিয়েটার সংলাপ
পালিয়ে যাক পৃথিবীর সকল নিষ্কর্মা — মরে যাক
রক্তের ঘ্রাণে নেড়েচেড়ে জিরিয়ে নাও সদাজাগ্রত ভদ্র মহোদয়গণ
রুহ চলে গেছে নরককুণ্ডে
এ পথের যাত্রী বন্ধু বলে—

—এত দেরী হলো কেন?
—জন্মের পর থেকে মৃত বানিয়ে ছেড়ে দিলে ঈশ্বর, মুক্তি নেই
—দুনিয়ায় মৃত শোক বোঝা যায়?
—মরে গেলে শোক শোক নাটক। টান টান আত্মীয় কান্না। প্রেমিকার আহাজারি। সে দুনিয়া আমি চুদি না
—তোকে আগুনে নিক্ষেপ করা হবে, পুড়ে ফেলা হবে শরীর, খেতে দেওয়া হবে বিষাক্ত সাপ মাংস
—ওসবে ভয় নেই। এখানে কেউ ভালোবাসা দিবে না।