শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

একজন নারী ইউটিউবার হিসেবে সব সময় চেষ্টা করবো নারীদের নিয়ে কাজ করতে- মারজিয়া মিমি

 

বিনোদন ডেস্কঃ প্রায় অর্ধশতাধিক নাটকে অভিনয় করা মিমি নিজের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেইসবুক পেইজে প্রকাশ করছেন এসব ভিডিও। তার বানানো এসব শর্টফিল্ম, সোশ্যাল অ্যাওয়ার্নেসসহ বিভিন্ন ধরনের ফানি ভিডিও ও ছোট ছোট ভাইন ভিডিওর মধ্যে অধিকাংশই লক্ষাধিক বারেরও বেশি দেখা হয়েছে তারই ইউটিউব চ্যানেল এবং ফেইসবুক পেইজ থেকে। এছাড়া ফেইসবুকের বিভিন্ন পেইজ থেকেও শেয়ার করা হয় মারজিয়া মিমির ভিডিও এবং সেখানেও লক্ষাধিক ভিউ আসছে প্রতিটি ভিডিওতে। বর্তমানে মিমির ইউটিউব চ্যানেলে সবস্ক্রাইবারের সংখ্যা প্রায় ২১ হাজার ৪৪৫+ এবং চ্যানেল ভিউ ১৩ ল ৪৮ হাজারেরও বেশি। মিমির ফেইসবুক ফ্যানপেজ “Marjia Mimi” তে লাইক রয়েছে ৪৩ হাজার+ এবং পেইজ ফলো করে ৪৭ হাজারেরও বেশী মানুষ। এছাড়াও মিমির ব্যাক্তিগত ফেইসবুক প্রোফাইল ফলো করেন ২৩ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং মিমির ইন্সটাগ্রামে ফলোয়ারের সংখ্যা ১ লাখ ৩৫ হাজার+। ইউটিউব ও ফেইসবুক মিলিয়ে মারজিয়া মিমির কিছু ভিডিওর ভিউঃ লাভ=ডিমান্ড?!: ১২ লাখ+, কলঙ্ক: ৫ লাখ+, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতেই হবে: ৫ লাখ ৭০ হাজার+, ফ্রেশ বউ চাই: ৫ লাখ ৯৬ হাজার+, প্রাইভেসি: ৩ লাখ ৪৫ হাজার+, মায়ের চাকরি: ১ লাখ ১২ হাজার+, বিশ্বাস: ৩ লাখ ৭ হাজার+, মা তোমাকে প্রতিদিন কে মারে?: ২ লাখ ৮৩ হাজার+, বউ=কাজের লোক: ৩ লাখ ২২ হাজার+, দ্যা চেইন্সোমার: ২ লাখ ৩৯ হাজার+, বরিশাইল্লা আম্মু অন ঈদ ডে: ১ লাখ ৪৪ হাজার+, পেঁয়াজ=ডায়মন্ড: ১ লাখ ৭ হাজার+, বরিশাইল্লা গার্লফ্রেইন্ড: ৭ লাখ ৯২ হাজার+, ভয়ংকর হাসি: ১লাখ ৯৭ হাজার+, বইরিশাইল্লা বয়ফ্রেইন্ড: এক লাখ ৭৮ হাজার+, নারী: ১ লাখ ৫০ হাজার+, মেয়ে=মাল?!: ১ লাখ ৬৭ হাজার+ মিমির সচেতনতামূলক ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচুর শেয়ার হচ্ছে।

মিমি বলেন, আমি মূলত নারীকেন্দ্রিক ভিডিও বেশি বানাই, নারীদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরার চেষ্টা করি। নিজের ভাললাগা থেকেই ভিডিও বানাচ্ছি ও শেয়ার করছি। আমার অনুপ্রেরণা আমার আম্মু আর আব্বু। আম্মু-আব্বুর একমাত্র মেয়ে আমি। ইদানীং অনেক মেয়েরাই তাদের জীবনের বিভিন্ন সমস্যা আমার সাথে শেয়ার করছেন অনলাইনে এবং তারা চান তাদের সমস্যা গুলি নিয়ে যেন ভিডিও বানাই যাতে ব্যাপারগুলি সবার সামনে আসে। তাদের নাম পরিচয় গোপন রেখে সেসব বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই ২০১৮ সালে বেশ কিছু ভিডিও নিয়ে আসব ইনশাআল্লাহ্‌। তিনি বলেন, আমার ভিডিওর স্ক্রিপ্ট আমিই লিখি, অধিকাংশ ভিডিও আমি নিজে এডিট করি। ভবিষ্যতে দর্শকদের আরও ভালো কিছু উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও মিমি ছোট বেলায় মা ও বরিশাল প্রান্তিক সংগীত বিদ্যালয়ের সাথী ম্যাডামের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নাচ শিখেছেন। অভিনয়ে আসার গল্প জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৫ সালে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই। এরপর অভিনয় করেছি ৬০ টির বেশি টেলিফিল্ম, সিংগেল, ডকু-ড্রামা ও ধারাবাহিক নাটকে। তার উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে, স্বপ্ন যাবে বাড়ি, আমিও মানুষ, আজ শুভ দিন, কার্নিশে ঝুলে থাকা প্রেম, ময়নাগুড়ি টি এস্টেট, অস্থির প্রেমিক, প্রাইভেট টিউটর, লড়াই, ভালবাসা এক্সপ্রেস, আবু হাসান দ্য সেলিব্রিটি, গিট্টু সেলিম, চুপ! ভাই কিছু ভাবছে, শুদ্ধ মোখলেস, সোনার কাঠি রূপার কাঠি, পিরিত, সুখপাখি, ডকু ড্রামাঃ সুষম সারে সফল জীবন ইত্যাদি। এছাড়াও মিমি ক্রাউন সিমেন্ট, কংকা টিভি এবং আশিয়ান হাসপাতালের বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন। এ বছর এপ্রিলে ঘুরে এসেছেন ইউটিউব স্পেস মুম্বাই থেকেও। মিমি বলেন, ইউটিউব স্পেস মুম্বাই ভ্রমণে গিয়ে সেখানে ভ্লগও বানিয়েছি। এছাড়া কলকাতার প্রিন্সেপ ঘাটে ‘ফেইক আইডি’ শিরোনামের একটি ভিডিওর শুটিং করেছি। সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। আমার প্রথম ভ্লগে ছিলেন জোভান ভাইয়া, তাসনুভা তিশা আপু, ডলি জহুর আন্টি, রাইসুল ইসলাম আসাদ আংকেল এবং আরো অনেকে। বরিশালের মেয়ে মিমি এখন পড়াশুনা করছেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভারসিটিতে আইন বিভাগে।

তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি ভাল রেজাল্ট করেছি। তাই যাই করিনা কেন পড়াশোনা ঠিক রেখে করতে হয়। তবে অভিনয়ের প্রতি আমার আগ্রহ বেশি। অভিনয়ের ক্ষেত্রে অভিনেতা তমাল মাহবুব ভাইয়া আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। মিমি বলেন, অন্যান্য প্রোডাকশনের বিভিন্ন শর্টফিল্মেরও কাজ করছি। বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইনান্স ফান্ড লিমিটেড এর সৌজন্যে আমি এ পর্যন্ত তিনটি সচেতনতামমূলক শর্টফিল্ম বানিয়েছি যেগুলোতে অভিনয় করেছেন অভিনেতা খলিলুর রহমান কাদেরী আংকেল, শাহেদ শরীফ খান ভাইয়া, তমাল মাহবুব ভাইয়া এবং আমি নিজেও। এছাড়াও বাংলাদেশ ইনফ্রাস্টাকচার ফাইনান্স ফান্ড লিমিটেডের সৌজন্যে “সণ্ত্রাস ও অর্থায়ন” শিরোনামের একটি শর্ট ফিল্ম খুব শীঘ্রই আমার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হবে। সম্প্রতি জি এম জি প্রোডাকশনের ব্যানারে ‘বিবেক’ শিরোনামের একটি শর্টফিল্মে কাজ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, নারীকেন্দ্রিক এই শর্টফিল্মে প্রধান চরিত্রটিতে আমি অভিনয় করেছি এবং অসম্ভব ভাল সাড়া পাচ্ছি। মিমি বলেন, এছাড়া জেরিন মিডিয়ার ব্যানারে তিনটি শর্টফিল্মে কাজ করেছি এবং সেগুলোর স্ক্রিপ্ট লিখেছি, ডিরেকশনও আমি দিয়েছি। এর মধ্যে ‘উপলব্ধি’ ও ‘ভালো-বাসা’ শিরোনামের দুটি ভিডিও ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে এবং বেশ ভাল সাড়া পাচ্ছি এবং গত ৫ ডিসেম্বর যুক্ত হয়েছি Bongo BD এর সাথে। এর পাশাপাশি মিমি উপস্থাপনা নিয়েও ব্যাস্ত সময় পার করছেন।

গত ১১ ডিসেম্বর ঢাকা জাতীয় জাদুঘরে ডি বি এল নিবেদিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেছেন মিমি। এছাড়াও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ক্লাব ফর পারফর্মিং আর্টস (ইসিপিএ) এর সর্বশেষ দুটি প্রোগ্রাম উপস্থাপনা করেছেন যার একটির আয়োজক ছিল “লাইট ইট আপ”। তিনি আরো জানান, আমি কারো সাথে কোন রকম প্রতিযোগিতা করতে চাইনা। আমি আমার নিজস্ব গতিতে কাজ করতে চাই, এগিয়ে যেতে চাই। একজন নারী ইউটিউবার হিসেবে আমি সবসময়ই চেষ্টা করব নারীদের নিয়ে বেশি কাজ করতে।