বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১খবরিকা অনলাইনে আপনাকে স্বাগতম।

জোট মহাজোটে নির্বাচনী আমেজ

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের শোডাউন, পুলিশি বাধায় মাঠে নামতে পারছে না প্রফেসর কামাল

kamal

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে মীরসরাইয়ের নির্বাচনের প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রতিযোগীতা  অলিম্পিক দৌড় প্রতিযোগীদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে সমপ্রতি। তবে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অফিস পাড়া সর্বত্র আলোচনার বিষয় এখন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন । নৌকা আর ধানের শীষ নিয়েই আলোচনা তুঙ্গে সর্বত্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম জিয়ার বক্তব্যে স্থান পাচ্ছে এখন শুধু জনগনকে স্ব স্ব দলের সমর্থনে আনা। সকলেই প্রতিপক্ষের ব্যর্থতা আর নিজেদের সফলতার কথাই তুলে ধরছেন জনগনের কাছে। তবে এতে দু’দলই দলের প্রতি কাদা ছুড়ছেনই একটু বেশী। আবার তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে ঐক্যমতে না আসায় উৎকন্ঠায় রয়েছে জাতি। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস’ার দাবীতে অনড় থাকলেও তবুও থেমে নেই তাদের নির্বাচনী কর্মকান্ড। বিভিন্ন  অনুষ্ঠানে বিএনপি কৌশলে জনগণের নিকট রায় প্রত্যাশা করার আহ্বান জানাচ্ছেন। ইতিমধ্যে মীরসরাইতে ও এই নির্বাচনী আমেজ যথেষ্টই তুঙ্গে রুপ লাভ করছে।

বড় দুই দলেই একাধিক প্রার্থী থাকলে ও দুই দলেই অবশেষে সর্বশেষ কে মনোনয়ন পাবেন তা অনেকটা পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে জনগনের কাছে। যদি ও মনোনয়নপত্র হাতে পাওয়া পর্যন- কেউ নিশ্চিত হতে পারবেন না কে মনোনয়ন পাবেন। কিন’ আপাতত দলীয় হাইকমান্ডের নানা কর্মতৎপরতা ও বিজ্ঞজনদের সার্বিক পর্যালোচনায় এটি অনেকটা ফুটে উঠেছে যে প্রকৃতপক্ষে কে কোন দল থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন। এই বিবেচনায় সুবিধাজনক অবস’ানে আছে আওয়ামী লীগ। বর্ষীয়ান জননেতা সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বর্ষীয়ান নেতা এবং সামপ্রতিককালে প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় আগামী সংসদ নির্বাচনে তাঁর প্রার্থীতা অনেকটা নিশ্চিত বলা যায়। যদিও তিনি চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসনে সংকটের কারনে সেখান থেকে ও তিনি নির্বাচন করবেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে এই বিষয়ে তাঁর বিশ্বস- সূত্র থেকে জানা যায় তিনি সেখান থেকে নির্বাচন করবেন না বরং সেখানে অন্য কাউকে প্রার্থী দিতে পারেন। অপর দিকে মীরসরাই থেকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে আলোচিত ব্যক্তিত্ব উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন। তিনি ও ইতিমধ্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকেই সমর্থন করছেন বলে গত ৫ অক্টোবর খৈয়াছরার জনসভায় বুঝিয়ে দিয়েছেন। তবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে তাঁর নাম দলীয় পর্যায় থেকে যায়নি বলেন তাঁর সমর্থকগোষ্ঠির মধ্যে অসনে-াষ বিরাজ করছে বলে জানা যায়। এদিকে গুঞ্জন উঠেছে যে উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তাঁর পুত্র মাহবুবুর রহমান রুহেল ও জসিম উদ্দিনের নাম গিয়েছে কেন্দ্রে। কিন’ এটি নিতান-ই গুঞ্জন বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ আতাউর রহমান।

এই বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ আতাউর রহমান বলেন আমরা মীরসরাইয়ের সুখ শানি- ও উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ছাড়া আর কারো কথা ভাবতেই পারি না। তিনি আরো বলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের চেতনায় পরীক্ষিত এই নেতা আমাদের ও প্রেরণার উৎস তাই আমরা এবং মীরসরাইয়ের সুশীল ও  গণমানুষের এই প্রিয় মানুষটির বিকল্প হিসেবে আমরা কারো কথা ০.০১ % ও ভাবতে পারি না। আর তাই আমরা দলীয় নিয়ম অনুযায়ী ৩ জন প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানোর নিয়ম থাকলে ও আমরা ১ জন প্রার্থীর নামই শুধু পাঠিয়েছি তিনি হলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। অপরদিকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি প্রেসিডিয়াম সদস্য  নির্বাচিত হওয়ায় গত ৫ সেপ্টেম্বর মীরসরাই আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে এক গণসংবর্ধনার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি করা হয় আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় নেতা তোফায়েল আহম্মেদকে। এই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ১৬ টি ইউনিয়ন থেকে প্রায় ১০ হাজার লোকের সমাগম ঘটিয়ে আওয়ামীলীগ শোডাউন করে।

মীরসরাই আসনটি নানা কারণে বিএনপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পিত্রালয় ফেনী জেলার নির্বাচনী আসনের পাশেই এ আসনের অবস’ান। তিনি নিজেও এ আসন থেকে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন। আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এখানকার ভোটারদের বৃহৎ অংশ জাতীয়তাবাদী চেতনা ও ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী। অসংখ্য পীর-আউলিয়ার স্মৃতিবিজড়িত এ আসনটিতে আলেম-ওলামারা বড় শক্তি। আগামী নির্বাচনে বিএনপি যোগ্য প্রার্থী দিতে পারলে তাদের বিজয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। তবে দলের তৃণমূলের নেতারা বলছেন, এতদস্বত্বেও আওয়ামীলীগ সুবিধাজনক অবস’ায় থাকলেও বিএনপির অবস’া নানাভাবে নাজুক। ১৮ দলের প্রার্থী প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরীই অবশেষে এখান থেকে মনোনয়ন পাবেন এটি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে সকলের কাছে।

ইতিমধ্যে তিনি মীরসরাই সদর সহ উপজেলা ব্যাপী ত্যাগী ও নিবেদিত নেতাকর্মীদের মাধ্যমে দলকে সুসংগঠিত করার প্রক্রিয়ায় অনেকটাই গুছিয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। জাতীয় কর্মসূচিগুলো ও চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর পক্ষের নেতাকর্মীরা। তবে বাধা হচ্ছে মীরসরাই থানা পুলিশ।  বিএনপির স’ায়ী কমিটির সদস্য যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ট্রাইবুন্যাল কর্তৃক ফাঁসির রায়ের প্রতিবাদে গত ৩ অক্টোবর  প্রফেসর কামাল উদ্দিন চৌধুরীর নেতাকর্মীদের মীরসরাই সদরে সমাবেশ শেষে বের করা মিছিলে বাধা দেয় মীরসরাই থানা পুলিশ। তবে পুলিশ জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। তাঁরা বলেন মহাসড়কে ভাংচুর হবার ভয়ে তাদের বিক্ষোভ করতে দেয়া হয়নি। প্রফেসর কামাল এই বিষয়ে আরো বলেন আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগ আমাদের ভয় পাচ্ছে তাই সুগভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে আমাদের মাঠে নামতে দিচ্ছে না এই সরকার।  এছাড়া প্রার্থীতার দৌড়ে সাবেক এমপি এম এ জিন্নাহ এর নামও শোনা যাচ্ছে। আবার নতুন উদীয়মান আমেরিকান প্রবাসী তারেক রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পরিষদের যুক্তরাষ্ট্র সভাপতি পারভেজ সাজ্জাদের নাম শোনা যাচ্ছে। অপরদিকে সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন কে সাধারন সম্পাদক পদ থেকে সামপ্রতিককালে অব্যাহতি দেয়া ও পূনরায় তা প্রত্যাহার  করা নিয়ে দলে বিশৃংখল অবস’া বিরাজ করছে। অপরদিকে জাসাদের কেন্দ্রীয় নেতা উপজেলা বিএনপির দুঃসময়ের কাণ্ডারী জাসাস কেন্দ্রীয় সদ্য ও  উত্তরজেলা জাসাস সাধারণ সম্পাদক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। সাধারন সম্পাদক নুরুল আমিন ইস্যু ও দলীয় বিশৃংখল নানা সমস্যা নিয়ে প্রফেসর কামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বড় দলে নানা সমস্যা থাকবেই, দলের সকলে মিলে যে সাংগঠনিক সিদ্ধান- নেয়া হবে তিনি তাতেই একমত হবেন। তিনি আরো বলেন ব্যক্তিস্বার্থে নয় আমরা সকলে শহীদ জিয়ার আদর্শে উজ্বিবীত হয়ে বিএনপির চেতনা লালন করলে প্রকৃতপক্ষে আর কোন সমস্যাই থাকে না।  আবার অপরদিকে জাতীয়পার্টি থেকে শায়েস-া খানকে মনোনয়ন দেবার কথা মাঠে রয়েছে,  জামায়াত এখন বর্তমান সরকারের যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে অসি-ত্ব সংকটের কারণে সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে কোন আলোচনা নেই। অপরদিকে  বামদলগুলোতে ও এখনো প্রার্থীতা নিয়ে কোন তোড়জোড়ের লক্ষণ দেখা যায়নি।

Leave a Reply